মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঊর্ধ্বগতির মধ্যেই কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে ৪১তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা সম্পন্ন করেছে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)।

শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে পরীক্ষা শুরু হয়ে দুপুর ১২টায় শেষ হয়। রাজধানীসহ দেশের আটটি বিভাগীয় শহরের ৩৫৯টি কেন্দ্রে একযোগে এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পৌনে পাঁচ লাখ প্রার্থী এতে অংশ নেন।

পরীক্ষা শেষে দুপুরে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ৪১তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা আয়োজনে সহযোগিতা করায় সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৪১তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহ কেন্দ্রে একযোগে অনুষ্ঠিত হয়। যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষাটি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ, মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তা/কর্মচারী, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, গণমাধ্যমকর্মী, কেন্দ্র ও হলপ্রধানসহ পরীক্ষার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানানো হচ্ছে।

এর আগে পরীক্ষা চলাকালীন রাজধানীর লালমাটিয়া মহিলা মহাবিদ্যালয় কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পিএসসি চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইন বলেছেন, দুই মাসের মধ্যে ৪১তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হবে।

তিনি আরও বলেন, ৪২তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফল প্রকাশে যদি ১৫ দিন লাগে, তাহলে আশা করা যায়- দুই মাসের মধ্যে ৪১তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা যাবে। দুই মাসের আগেও প্রকাশ হতে পারে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন পিএসসি চেয়ারম্যান।

উল্লেখ্য, দুই হাজার ১৬৬টি পদে ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর ৪১তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে পিএসসি। ৪১তম বিসিএসে সবচেয়ে বেশি নেওয়া হবে শিক্ষা ক্যাডারে। এই ক্যাডারে ৯১৫ জনকে নিয়োগ দেয়া হবে। এর মধ্যে বিসিএস শিক্ষাতে প্রভাষক ৯০৫ জন, কারিগরি শিক্ষা বিভাগে প্রভাষক ১০ জন নেয়া হবে।

প্রশাসন ক্যাডারে ৩২৩ জন, পুলিশে ১০০ জন, বিসিএস স্বাস্থ্যতে সহকারী সার্জন ১১০ জন ও সহকারী ডেন্টাল সার্জন ৩০ জন, পররাষ্ট্রে ২৫ জন, আনসারে ২৩ জন, অর্থ মন্ত্রণালয়ে সহকারী মহা হিসাবরক্ষক (নিরীক্ষা ও হিসাব) ২৫ জন, সহকারী কর কমিশনার (কর) ৬০ জন, সহকারী কমিশনার (শুল্ক ও আবগারি) ২৩ জন ও সহকারী নিবন্ধক ৮ জন নেওয়া হবে।

এছাড়া পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগে পরিসংখ্যান কর্মকর্তা ১২ জন, রেলপথ মন্ত্রণালয়ে সহকারী যন্ত্র প্রকৌশলী ৪ জন, সহকারী ট্রাফিক সুপারিনটেনডেন্ট ১ জন, সহকারী সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক ১ জন, সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) ২০ জন, সহকারী প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) ৩ জন নেয়া হবে।

তথ্য মন্ত্রণালয়ে সহকারী পরিচালক বা তথ্য কর্মকর্তা বা গবেষণা কর্মকর্তা ২২ জন, সহকারী পরিচালক (অনুষ্ঠান) ১১ জন, সহকারী বার্তা নিয়ন্ত্রক ৫ জন, সহকারী বেতার প্রকৌশলী ৯ জন, স্থানীয় সরকার বিভাগে বিসিএস জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলে সহকারী প্রকৌশলী ৩৬ জন, সহকারী বন সংরক্ষক ২০ জন।

সহকারী পোস্টমাস্টার জেনারেল পদে দুজন, বিসিএস মৎস্যতে ১৫ জন, পশুসম্পদে ৭৬ জন, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ১৮৩ জন ও বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ৬ জন, বিসিএস বাণিজ্যে সহকারী নিয়ন্ত্রক ৪ জন।

পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ৪ জন, বিসিএস খাদ্যে সহকারী খাদ্যনিয়ন্ত্রক ৬ জন ও সহকারী রক্ষণ প্রকৌশলী ২ জন, বিসিএস গণপূর্তে সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) ৩৬ জন ও সহকারী প্রকৌশলী (ই/এম) ১৫ জনসহ মোট ২ হাজার ১৩৫ জন কর্মকর্তাকে এই বিসিএসে নিয়োগ দেওয়া হবে।

দুই হাজার ১৬৬টি পদের বিপরীতে আবেদন করেন প্রায় পৌনে ৫ লাখ চাকরিপ্রার্থী। করোনার প্রকোপ কমে এলে পিএসসি পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করে। পরে প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় পরীক্ষা পিছিয়ে যাওয়ার দাবি ওঠে। হাইকোর্টে রিটও হয়। আদালত নির্ধারিত তারিখেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা নেওয়ার আদেশ দেন।